জীবন পথে চলতে চলতে কোন এক সময় পেছন ফিরে তাকালে বুঝা যায় এরই মধ্যে কতটা সময় পেরিয়ে এসেছি। বয়স থামতে শেখেনি। তাই আমরা চলছি তো চলছি- ক্লান্তি থাক্ না থাক্। আমরা যারা বিদ্যালয়ে পড়েছি কৈশোরের দূরন্ত সময় কাটিয়েছি সহপাঠী ও ছোট-বড় অনেকের সাথে। কখনো সখনো তা মনে পড়ে বৈ-কি। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে মহাকালে পাড়ি দিয়েছেন অনেকে। অন্যরা রয়েছেন বিশ্বের কোন না কোন স্থানে। নানা ভাবে চেষ্টা চলছে একবার বিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থী সূত্রে নবীনে-পৌঢ়ে মিলে উৎসব করি। উদ্দেশ্য পরিচিতির বহরটাকে আরো গাঢ় এবং বিস্তৃত করা। ভ্রাতৃত্বের একটা সুদৃঢ় বন্ধন তৈরী হোক। উল্লাসে একটা মায়াবি সময় কাটাতে চাই।
অনেক মনীষী জীবনকে খেলার সাথে তুলনা করেছেন। খেলা যেমন আছে ইনডোর আউটডোর, একাকী নিভৃতে এমনকি ঘুমেও। জীবন মানে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা- এমন কথাও বলা আছে। শুধু হেসে খেলে জীবনটা কাটেনা। হাসি খেলা না থাকলে বিষন্নতাও দূরীভূত হয়না। শেখার ক্ষেত্রেও তেমনি শোনা যায়, খেলার ছলে শেখা কিংবা শেখার ছলে খেলা। তবে জীবনটা জুয়াখেলা নয়তো?
A.C. Low Pilot High School
বিদ্যালয় আছে, বিদ্যালয়ের মাঠও আছে। এমন একটির নাম ‘এ.সি. লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’। এই বিদ্যালয়ে পাঠদানের পাশাপাশি, ক্রীড়া, সংস্কৃতি চর্চা, মন ও মনন বিকাশের বহুতর পন্থায় প্রচুর কাজ হয়েছে। বিদ্যালয়ের গৌরব ও ঐতিহ্য অনেক আছে। স্বদেশে ও নানা দেশে এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা শ্রমে, ব্যবসায়, কৃষি, মৎস্য চাষে, শিক্ষায়, চাকুরীতে, বিভিন্ন পেশায়, জন প্রতিনিধি, রাজনীতি, কবি-সাহিত্যিক, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী, উকিল, মুন্সি, ধর্মীয় বিশেষ ব্যক্তিত্বে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এবং কর্মে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খ্যাতি কুড়িয়েছেন অনেকে। অনেকে জীবন রণে অক্লান্ত সেনানীর মহান কর্মে রত আছেন। আমাদের বাসনা জেগেছে এই প্রাচীন বিদ্যাপীঠে পুরোনো শিক্ষার্থীরা মিলিত হই। সম্মেলন হোক আমাদের। হারানো দিনের আমেজে একটা দিন মেতে উঠি স্বোল্লাসে। প্রাণ খুলে মিশবো বন্ধুদের সাথে, অগ্রজদের সাথে সম্মানে ও অনুজদের সাথে প্রীতিতে। সুন্দর একটা দিন কাটুক বিচিত্র আয়োজনের ভেতর তৃপ্তিসহ। সেদিনও আমার ভেতর অন্যে এবং অন্যতে হয়ত আমায় দেখা যাবে। নিশ্চয় খুব ভাল লাগবে।
আত্মীয়তার নানা সূত্র থাকে। এ.সি. লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’তে আমরা কে কে পড়েছি কেবল সে সূত্রেই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ নির্মিত হোক আমাদের স্বচ্ছ লক্ষ্য এটি। প্রিয়জনদের সাথে মিশে হরষে সময় কাটাতে চাই আমরা। চিরতরে হারানো আমাদের শিক্ষক মহোদয়গণ ও ভাইবোনদের আত্মার মাগফেরাত কামনার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। বর্ণাঢ্য র‌্যালীসহ একটু ঘুরে আসা হবে জলযোগ, মেজবান, আড্ডা, স্মৃতিচারণ, বক্তব্য, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উপহার ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হবে। হেলায় নয়, খেয়ালে স্মৃতিময় করে রাখার জন্য এই বিশেষ দিনে আমরা মিলতে চাই। আমাদের এই মিলন মেলা সফল করতে সবার সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া অসম্ভব। আমাদের প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে এবং সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এ.সি. লাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলন সফল ও স্বার্থক হোক।
মাসুদ রানা, 2005 ব্যাচ